নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারের গভীরতা ও তারল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও কার্যকর ও মৌলিক ভিত্তিসম্পন্ন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করতে সরকার একটি বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ নিয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর যৌথ সমন্বয়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে শিল্পসচিব ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দেশের শেয়ারবাজারে কাঠামোগত উন্নয়ন এবং বাজার সম্প্রসারণের কৌশল নির্ধারণে এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার লক্ষ্য ও কাঠামো
সরকার এমন সব বহুজাতিক ও সরকারি অংশীদারিত্বযুক্ত কোম্পানির শেয়ার বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে, যেগুলোর মৌলিক ভিত্তি শক্তিশালী এবং যেগুলো দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে সক্ষম। প্রাথমিকভাবে যেসব কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার রয়েছে, সেগুলোর অন্তত ৫ শতাংশ শেয়ার এবং একই পরিমাণ বিদেশি অংশীদারদের শেয়ার অফলোড করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এর ফলে বাজারে ফ্লোটিং শেয়ারের পরিমাণ বাড়বে, তরলতা বৃদ্ধি পাবে এবং বাজারের পরিধি সম্প্রসারিত হবে।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ও প্রতিনিধিরা
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রাশিদুল হাসান ও নুরুজ্জামান, যুগ্ম সচিব সাজেদুর রহমান, উপসচিব নুরুন্নাহারসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন। পাশাপাশি ইউনিলিভার বাংলাদেশ, নুভিস্টা ফার্মা, সানোফি বাংলাদেশ, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, রেকিট বেনকিজার (বাংলাদেশ), দ্য বেঙ্গল গ্লাস ওয়ার্কস, মিরপুর সিরামিক ওয়ার্কস, হিমাদ্রি লিমিটেড এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ এবং আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের সিইও মাজেদা খাতুন বৈঠকে শেয়ার অফলোডিং প্রক্রিয়ার কাঠামো ও বাস্তবায়নযোগ্যতা নিয়ে মতামত দেন। বিসিআইসি চেয়ারম্যান এবং বিএসআরবি মহাপরিচালকও আলোচনায় অংশ নেন।
প্রস্তুতি ও বাস্তবায়নের বিষয়
বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল শেয়ার অফলোডের প্রক্রিয়াগত দিক, কোম্পানিগুলোর প্রস্তুতি, এবং একটি কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নের রূপরেখা। অংশগ্রহণকারীরা এমন একটি ব্যবস্থা প্রস্তাব করেন, যেখানে শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া সহজ, স্বচ্ছ এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় হয়। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, কীভাবে এই শেয়ারগুলো সেকেন্ডারি বাজারে তালিকাভুক্ত করা যায় এবং দ্রুত লেনদেনযোগ্য করে তোলা যায়।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
সরকার আশা করছে, এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। দীর্ঘমেয়াদে বাজারে মূলধনের ভিত্তি আরও দৃঢ় হবে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য উচ্চ মানসম্পন্ন বিনিয়োগ বিকল্প তৈরি হবে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
আল-মামুন/
নিউজটি আপডেট করেছেন : Jatiyo Potrika
বাজারে আসছে ইউনিলিভারসহ বহু কোম্পানির সরকারি শেয়ার
- আপলোড সময় : ৩১-০৭-২০২৫ ১১:৩১:৩২ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩১-০৭-২০২৫ ১১:৩১:৩২ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ